পৃথিবীর নিরাপদ ৬০ টি শহরের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ পাঁচটি শহরের তিনটি জাপানের টোকিও, বাণিজ্যিক শহর ও ওসাকা। বাংলাদেশের ঢাকা শহরের অবস্থান ৫৬ তম । আমার বুড়ি ও আমি একটি নিরাপদ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি।
কিন্তু কিভাবে সম্ভব?
নারীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ দেশের মধ্যে জাপান অন্যতম। সেখানে নারীরা বাংলাদেশের মত পর্দা করেনা, তবু ও কোন নারীকে পুরুষের কুদৃষ্টির শিকার হতে হয়না। অথচ বাংলাদেশের ৯৯ শতাংশ পুরুষ দাবি করে ” পোশাকের কারনেই ধর্ষণ!!
বোরকা পরলেই সব ঠিক হয়ে যাবে !!
এই হাস্যকর যুক্তি যেইসব নারী ও পুরুষ দেয় ওদের পাকিস্তানের করাচি ও নাইজেরিয়ায় লাগোস শহরে পাঠানো উচিত। তাহলে অন্তত এই বলদগুলো বুঝতে পারবে পোশাক নয় , বরং দায়ি হচ্ছে সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষা।
আমাদের দেশে শিশু কে মানবিক শিক্ষা না দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয় বলেই মানুষের নৈতিক ও চারিত্রিক এই অধঃপতন । অন্যদিকে জাপানে শিশুকাল থেকেই শিশুদের পরিবারে ও বিদ্যালয়ে মানবিকতা ও নৈতিকতার শিক্ষা দেওয়া হয়। আমাদের দেশে যেখানে শিশুদের ছোটবেলা থেকেই সাম্প্রদায়িকতার শিক্ষা দিয়ে ঘৃণার শিক্ষা দেওয়া হয় , সেখানে জাপখনী শিশুদের শিক্ষা দেওয়া হয় মানুষ কে ভালোবাসার শিক্ষা।
গভীর রাতে ও নির্জন রাস্তায় জাপানের একজন নারী নিরাপদ। কিন্তু আমাদের দেশে দিনের আলোতে ও একজন নারী নিরাপদ নয়। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে ধর্মীয় কুশিক্ষা ও পুরুষের কুদৃষ্টি।অথচ যুগে যুগে এর জন্য আমাদের দেশে এর জন্য নারীকে দোষারোপ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ , ভারত ও পাকিস্তানের মানবিকতার চেয়ে ধর্মীয় শিক্ষা বেশি হওয়ায় কি পরিমান নৈতিক ও চারিত্রিক অধঃপতন হয়েছে তা দেখে আপনার গা শিউরে উঠবে। অথচ নাস্তিকের দেশ জাপানে অন্ধকার রাস্তায় ও একজন নারী এই পৃথিবীতে সবচেয়ে নিরাপদ বোধ করে।
উইস্টেরিয়া গাছের দেশ জাপান হোক সমগ্র পৃথিবীতে মানবতা শিক্ষার সবচেয়ে বড় বিদ্যালয়।
আমাদের দেশের বিদ্যালয়গুলো যেখানে ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে অমানুষ পয়দা করছে সেখানে জাপানের বিদ্যালয়গুলোর সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো একটি আদর্শ জাতি গড়ে তোলা।
জাপানের বিদ্যালয়গুলো তে ধর্মীয় শিক্ষা না দিয়ে সততা , উদারতা , স্বনির্ভরতা ও মানবিকতার শিক্ষা দেওয়া হয়। জাপানি শিশুদের শিক্ষা দেওয়া হয় পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের।
আমাদের দেশের শিশুদের ঘৃণা , লোভ ও হিংসার শিক্ষা দেওয়া হয়। আমাদের শিশুদের নারী কে সম্মানের শিক্ষা দেওয়া হয়না।এর জন্য দায়ী হচ্ছে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নগ্ন মানসিকতা।
বাংলাদেশের নারীরা কেন খোলা আকাশের নীচে মুক্তমনে বৃষ্টিতে ভিজতে পারেনা ?? বাংলাদেশের নারী অগ্রগতির পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা পুরুষের কুদৃষ্টি।
আমার বুড়ির অনন্য সুন্দর চিন্তাগুলো নারীর প্রতি আমার সম্মান হাজার গুণ বাড়িয়ে দেয়।। আসুন আমরা সবাই নারীদের সম্মানের শিক্ষাটা নিজ নিজ পরিবার থেকে শুরু করি। নিজ নিজ সংসারে মা, বোন ও স্ত্রী কে সম্মান দিলে এই দেশ একদিন পরিবর্তন হতে বাধ্য।
আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হলে
অবশ্যই আলো আসবে।
জুলিয়াস সিজার।
Leave a Reply